পানির মধ্যে সাত দিন ধরে ভাসতে ভাসতে উপায় না পেয়ে ঢেকুরিয়া ইকোপার্কে ঠাঁই নিয়েছেন মালেকা খাতুন। নিজের সহায়সম্বল হারিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে টিনের ছাপরার এক কোনে ঠাঁই নিয়েছেন তিনি।
৬২ বছর বয়সী মালেকা খাতুন সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার মাইজবাড়ি ইউনিয়নের পুরান মাইজবাড়ি চরের জনু মন্ডলের মেয়ে। প্রায় ১৫ বছর আগে একই গ্রামের এলি মন্ডলের ছেলে আসমতের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হলে চলে আসেন বাড়িতে। বাবার বাড়িতে একমাত্র স্বজন বড় ভাইয়ের সহযোগিতায় ছোট্ট একটা ছাপরা ঘর ওঠান মালেকা খাতুন। সেই ঘরও কেড়ে নিল যমুনার করাল গ্রাস। সরেজমিনে মালেকার খাতুনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, অন্যের বাড়ি থেকে মরিচের গুঁড়া এনে কাঁঠালের বিচি ভর্তা করে ভাত খাচ্ছিলেন আর বলছিলেন, ‘টেহা নাই মানসের থাইকা মরিচের গুঁড়া আইনা কাঁঠালের বিচি ভর্তা করে ভাত খাচ্ছি। আমার কেউ নাই, কেমনে চলমু আমি।’
মালেকার মতো আর অনেকে এই পার্কের মাঠে মাথা গোঁজার ঠাঁই নিয়েছে।
৬০ বছর বয়সী দিনমজুর শাহজাহান আলী সরকার বলেন, ‘পানির মধ্যে আছিলাম। ঠাঁই নিছি পার্কে। এহন মুড়ি ছাড়া উপায় নাই। একসময় আমার সব ছিল, এখন আমার কিছু নাই। এই নদী আমাক শেষ কইরা দিছে।
শাহজাহান আলী সরকার সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার মাইজবাড়ি ইউনিয়নের মল্লিকপাড়া গ্রামের ভোলা সরকারের ছেলে।
একই এলাকার দেরাজ শেখের মেয়ে সুবিয়া খাতুনের একই অবস্থা, যমুনার রাক্ষস করাল গ্রাসে সবকিছু আজ নদীগর্ভে বিলীন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ওনাদেরকে জিআর প্রকল্পের সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তথ্য নিচ্ছি। যা যা সাহায্য দরকার, তা আমরা করব।