গাজা যুদ্ধের কারণে এমনিতেই জো বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কের কিছুটা টানাপোড়েন চলছে। তার মধ্যে কয়েক সপ্তাহ আগে খবর বেরোয়, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগেই বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে তড়িঘড়ি একটি পরমাণু চুক্তি করতে চায় ইরান। এবার সেই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করল কুয়েতের আরবি ভাষার সংবাদপত্র দৈনিক আল জারিদা। সংবাদপত্রটির বরাতে জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে, বাইডেন প্রশাসন ইরানের সঙ্গে একটি পরমাণু চুক্তি সইয়ে রাজি ছিল।
সম্ভাব্য এই চুক্তি নিয়ে শুক্রবার খবর প্রকাশ করে আল জারিদা। ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, কিছুদিন আগে মার্কিন কর্মকর্তারা চুক্তির ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা জানায়, ২০১৫ সালে হওয়া ওই চুক্তির সামান্য কিছু পরিবর্তন করে, তাতে ফিরে যেতে আপত্তি নেই বাইডেন প্রশাসনের। সূত্রটি জানায়, গেল ৭ অক্টোবর থেকেই দুই দেশের নিরাপত্তা পর্যায়ে যোগাযোগ চলমান আছে। তবে সম্প্রতি এই যোগাযোগটা প্রায় প্রতিদিনই হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলার আগেই ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের মধ্যে একটি অলিখিত চুক্তিতে ফেরার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে দুই দেশের মধ্যকার এই অগ্রগতি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির আকস্মিক মৃত্যুর কারণে থমকে যায়।
ইরানের কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী নভেম্বরে নিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এমন একটি চুক্তি সই করতে চাইছিলেন বাইডেন। যদিও বাইডেন চাইছিলেন, চুক্তি হওয়ার আগেই পরমাণু চুক্তির শর্ত মেনে চলুক ইরান।
ন্যাটোর আদলে সামরিক জোট গঠনের প্রস্তাব ইসরায়েলের
২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনামলে ইরানের সঙ্গে ছয় জাতির পরমাণু চুক্তি হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে একতরফাভাবে ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনেন। এ নিয়ে চরম অসন্তোষ তৈরি হয় তেহরানে। এখন সেই ট্রাম্পই আবারও ওভাল অফিসে বসার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমতাবস্থায় খুশিতে ইসরায়েলের বুকের ছাতি বড় হলেও মনে আতঙ্ক ঢুকে গেছে ইরানের।
উল্লেখ্য, ঘনিয়ে আসছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার আগেই নানা সমীকরণের হিসাব-নিকাশ চলছে। দলীয় চাপে গেল সপ্তাহে নির্বাচন থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন জো বাইডেন। এখন ডেমোক্রেটদের হয়ে কমলা হ্যারিসের লড়াইয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে প্রতিপক্ষ শিবিরের এমন টালমাটাল অবস্থায় রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পথ আরও সুগম হয়েছে বলে মনে করেন অনেক। আবার মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পরম মিত্র ইসরায়েলও এবার প্রকাশ্যেই ট্রাম্পের পক্ষে বাজি ধরেছে।