নারায়ণগঞ্জের সড়ক ও মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় সড়কে অগ্নিসংযোগ ও অবরোধ করায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১১টা থেকে জেলার বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায় শক্ত অবস্থানে রয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তবে জেলার সড়ক ও মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি তেমন চোখে পড়েনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডসহ বিভিন্ন স্থানের পোশাক কারখানার বন্ধ রেখে আন্দোলনে যোগ দিতে আহ্বান জানান তারা। এসময় কয়েকটি পোশাক কারখানায় ভাঙচুর চালায় বিক্ষোভকারীরা। পরে পোশাক কারখানা বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ। এ ছাড়া লিংক রোডস্থ নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের ভবন ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। পরে চাষাঢ়ায় রাইফেল ক্লাব ও ট্রাফিক পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে থাকা দুর্বৃত্তরা।
এর আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-চট্টগ্রাম সিলেট মহাসড়ক অবস্থান নিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার কারণে ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো যাত্রীরা।
ঢাকায় অফিসে যাওয়া মহাসড়কে একটি প্রাইভেট কোম্পানির কর্মচারী বিপুল জানান, বাসা থেকে বের হয়ে মহাসড়কে এসে আটকে পড়েছি। গাড়ি চলাচল বন্ধ, যে কারণে হেঁটেই যেতে হচ্ছে। এই হয়রানি আর ভোগান্তির শেষ কোথায়।
সাইনবোর্ড এলাকায় আরেক পথচারী আলম চাঁন বলেন, চিকিৎসার জন্য ঢাকায় হাসপাতালে যাব। কিন্তু গাড়ি বন্ধের কারণে যেতে পারছি না। পায়ে হেঁটে ও রিকশা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। ভেতরে একটা আতঙ্ক কাজ করছে। এগুলোর সমাধান হওয়া দরকার। শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার দাবি জানাচ্ছি।
সড়কে থাকা কয়েকটি গাড়িতে ইট-পাটকেল ও লাঠি দিয়ে ভাঙচুর করতেও দেখা যায় আন্দোলনকারীদের। এদিকে মহাসড়কের মদনপুর এলাকায় শ্যামলী পরিবহনের একটি কলকাতাগামী যাত্রীবাহী বাস আটকে দেয় বিক্ষোভকারীরা। পরে যাত্রীদের অনুরোধে বেশ কিছুক্ষণ পর আটকে রেখে ছেড়ে দেয় তারা। এখন পর্যন্ত জেলার মার্কেট, দোকান ও শপিংমলসহ প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে দেখা যায়।
এসময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের দাবি নিয়ে আমরা রাস্তায় নেমেছি। আমাদের ভাইবোনদের হত্যার বিচার করতে হবে। সব শ্রেণিপেশার মানুষকে আমাদের এ আন্দোলনে আসার আহ্বান জানাই। আমাদের দাবি না পূরণ হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
সকাল থেকে চাষাঢ়া শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন পয়েন্টে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জমায়েত হয় আন্দোলনকারীরা। সরকার পদত্যাগের এক দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে কম্পিত করে তারা। চাষাঢ়া বিজয় স্তম্ভ থেকে বিশাল মিছিল নিয়ে সড়কের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন তারা। মিছিল ২নং রেলগেইট এলাকায় আওয়ামী লীগ অফিসে সামনে এসে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে দেখা যায়। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এসময় দেখা যায়নি। পরে মিছিল নিয়ে চাষাঢ়া বিজয়স্তম্ভের সামনে জমায়েত হয়ে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে দখলে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা।