রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষার্থীসহ বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের ৪২০ জন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) থেকে বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৪টা পর্যন্ত এসব কারাবন্দিরা মুক্তি পেয়েছেন। রজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. আমান উল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মুক্তি পাওয়া বন্দিদের অধিকাংশই বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
রাজাশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র জানায়, আদালত থেকে জামিননামা আসার পর যাচাইবাছাই করে বুধবার ৮০ জনকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ৩৪০ জনকে জামিনে মুক্তি পান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৫ শতাধিক বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়ে কারাবন্দি হন। এর আগে গত ৩ আগস্ট রাজশাহীর পাঁচ এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
রাজশাহী অ্যাডভোকেট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট পারভেজ তৌফিক জাহেদী বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজশাহীতে ৮টি মামলা হয়েছে। সবগুলো মামলাতেই কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে কয়েকশত করে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছিল। সেই হিসেবে এসব মামলায় আসামির সংখ্যা আনুমানিক দুই হাজারের অধিক হবে। নুতন মামলাসহ পুরাতন কিছু নাশকতার মিথ্যা মামলায় রাজশাহীতে বিএনপি-জামায়াতের সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছিল। গত জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যারা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪০০ গত দুই দিনে মুক্তি পেয়েছে। পর্যায়ক্রমে জেলাহাজতে কারাবন্দি সবাই মুক্তি পাবেন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, ‘হাসিনা সরকারের প্রেতাত্মা ও অতি উৎসাহী বিপথগামী কিছু পুলিশ কর্মকর্তা গত পহেলা জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় শিক্ষার্থীসহ আমাদের প্রায় কয়েকশত নেতাকর্মীদের কারাগারে বন্দি করে রাখে। হাসিনা পালানোর পর পরই মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি থাকা নেতাকর্মীরা মুক্তি পেতে শুরু করে। গত দুই দিনে আমাদের কয়েকশত নেতাকর্মী মুক্তি পেয়েছে।’
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. আমান উল্লাহ বলেন, ‘আদালত থেকে জামিন পাওয়া গত দুদিনে রাজশাহীর ৪২০ জন কারাবন্দি মুক্তি পেয়েছেন। পহেলা জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে এসেছিল মোটামুটি ৪৫০ জনের মতো। প্রায় সবেই জামিনে মুক্তি পেয়েছে। অল্প কয়েকজন রয়েছে তারাও হয়তো আগামীকাল (৮ আগস্ট) মধ্যে জামিনে মুক্তি পেয়ে যাবে।’
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে গত ৫ আগস্ট এক শিক্ষার্থী নিহত হন। ৫০ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন শতাধিক শিক্ষার্থী। তারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।