যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রাশিয়ায় অভিযান চালাচ্ছে ইউক্রেন। একের পর এক অঞ্চল দখলে নিচ্ছে তারা। রাশিয়াকে দমিয়ে দিতে দেশটির সবচেয়ে মারাত্মক অস্ত্রকে টার্গেট করেছে ইউক্রেন। কুরস্ক অঞ্চলের সীমান্তবর্তী এলাকায় ইউক্রেন বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ যতটা শক্ত হচ্ছে, ততই যেন আরও দুঃসাহসী হয়ে উঠছে তারা। আর তাই পাশার দান উল্টে, শিকার এখন শিকারির ভূমিকায়।
মার্কিন সাময়িকী নিউজউইক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইউক্রেন বাহিনীর কাছে খাবি খাচ্ছে মস্কো। একের পর ড্রোন হামলা চালিয়ে রাশিয়ার সামরিক বিমানঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইউক্রেন বাহিনী। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে রাশিয়ার ভোরোনেজ, কুরস্ক ও নিজনে নভোগোরোদ অঞ্চলে অবস্থিত চারটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে দূরপাল্লার ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে কিয়েভ। এতে কোমর ভেঙে যাচ্ছে রাশিয়ার বিমান বাহিনীর।
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের মূল টার্গেট হচ্ছে বিমানঘাঁটির গুদামঘরগুলো। সেখানে জ্বালানি ও অ্যাভিয়েশন অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে। রাশিয়ার ওই চারটি সামরিক বিমান ঘাঁটিতে এসইউ-৩৪ ও এসইউ-৩৫ এর মতো পঞ্চম প্রজন্মের বিমান পার্ক করে রাখা ছিল। এসব বিমান দিয়েই ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষার ব্যুহভেদ করে মিসাইল ও গ্লাইড বোমা দিয়ে হামলা চালিয়ে আসছিল রাশিয়া।
চলতি সপ্তাহে বড় ধরনের সাফল্য পায় ইউক্রেন। কিয়েভ জানায়, তারা কুরস্কে একটি এসইউ-৩৪ ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইউক্রেনের অঞ্চলের ভেতর ঢুকে গ্লাইড বোমা দিয়ে এসব বিমান যেন হামলা চালাতে না পারে, সেজন্য রাশিয়ার বিমান ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের শতাধিক ড্রোন রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভূপাতিত করে।
মস্কো জানিয়েছে, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ১১৭টি ড্রোন প্রতিহত করেছে। এর মধ্যে কুরস্কে ৩৭টি, ভোরোনেজে ৩৭টি ও নিজনে নোভোগোরোদ অঞ্চলে ১১টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে। রাশিয়াকে চাপে রাখতে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর কয়েকটি ইউনিটের কর্মকর্তারা এই অভিযানের অংশ হয়েছে। কিয়েভ জানিয়েছে, বিমান বাহিনী ও বিশেষ অভিযান বাহিনীর পাশাপাশি এই অপারেশনে এসবিইউ সিকিউরিটি সার্ভিস এবং জিইউআর মিলিটারি ইনটেলিজেন্স এজেন্সি অংশ নিচ্ছে।
তবে পশ্চিমাদের দেওয়া দূরপাল্লার বিভিন্ন অস্ত্র যেমন মার্কিন সেনাবাহিনীর কৌশলগত মিসাইল সিস্টেম-এটিএসিএমএস কিংবা ব্রিটেনের দেওয়া স্টর্ম শ্যাডোর মতো অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার একেবারে ভেতরে থাকা বিমান ঘাঁটিতে হামলার অনুমতি দেওয়া হয়নি ইউক্রেনকে। এজন্য অবশ্য ইউক্রেন বারবার আওয়াজ তুলেছে। তবে আপাতত পশ্চিমাদের দেওয়া স্বল্পপাল্লার অস্ত্র দিয়েই হামলা চালিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে ইউক্রেনের।