পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও তাঁর ছেলে জুহায়ের সারার ইসলামের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়ে অ্যাকাউন্ট জব্দ করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
বিএফআইইউয়ের সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হিসাব জব্দ করাদের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সব লেনদেন বন্ধ থাকবে। আগামী ৩০ দিন এসব হিসাবে কোনো ধরনের লেনদেন করা যাবে না। প্রয়োজনে লেনদেন স্থগিত করার এ সময় বাড়ানো হবে।
লেনদেন স্থগিত করার এ নির্দেশনায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে বিএফআইইউয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে। চিঠিতে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও তার ছেলে জুহায়ের সারার ইসলামের পিতা-মাতার নাম এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেওয়া হয়েছে।
বিএফআইইউয়ের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, কোনো হিসাব স্থগিত করা হলে হিসাব সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি চিঠি দেওয়ার তারিখ থেকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের কাছে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে।
প্রবল গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাঁর অতি আস্থাভাজন শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বিএসইসির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এর আগে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর বিরোধিতা সত্ত্বেও চলতি বছরের ২৮ মে তাকে ৪ বছরের মেয়াদে পুনঃনিয়োগ দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ২০২০ সালের ১৭ মে তাকে প্রথমবার বিএসইসির চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের মেয়াদে পুঁজিবাজারে ব্যাপক লুটতরাজ হয়েছে বলে আভিযোগ আছে। অভিযোগ অনুসারে, তারসঙ্গে যোগসাজশ করে হাজার থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বাজারে লাগামহীন কারসাজি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ফতুর করে দিয়েছেন আবুল খায়ের হিরো, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমালসহ শিবলীঘনিষ্ট চক্র। পর্ষদ পুনর্গঠনের নামে বিভিন্ন কোম্পানিতে নিজের ঘনিষ্ট ব্যক্তিদের পরিচালক হিসেবে বসিয়ে নতুনভাবে লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়া; ব্যবসা না করতে পেরে বন্ধ হয়ে যাওয়া কোম্পানিকে নিজের লোকদের হাতে তুলে দিয়ে সেগুলোকে পুনরায় বাজারে নিয়ে এসে বিনিয়োগকারীদের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ করে দেন তিনি।