Home Bangladesh ‘জীবনেও এতো পানি দেখিনি’

‘জীবনেও এতো পানি দেখিনি’

54
0

৬০ এবং ৬২ বছর বয়সী আনোয়ারা ও মনোয়ারা দুই বোন। আশ্রয় নিয়েছেন বাতিসা বালিকা বিদ্যালয়ে। হতাশার ছাপ তাদের চোখে-মুখে। বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে তারা দুই বোন বলেন, আমাদের এ বয়সে চৌদ্দগ্রামে বন্যায় এতো পানি হবে তা কল্পনাও করিনি। আমাদের গ্রামে কখনও বন্যা হয়নি। জীবনেও এতো পানি দেখিনি। সিমান্তবর্তী উজানের ঢলে গেল বুধবার রাতে হু হু করে বাড়িতে পানি ঢুকে। ফজরের আজানের পর নাতি-নাতনিদের নিয়ে কোনো রকম আশ্রয়কেন্দ্রে এসে জীবন রক্ষা করি।

তারা আরও বলেন, গত কয়েক দিনে টানা বৃষ্টিপাত হলেও গত বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত টানা বৃষ্টি সঙ্গে বজ্র ও দমকা হাওয়ার সঙ্গে পানি বেড়ে যায়। ঘর বাড়ি ভেসে যায়। আমার গ্রাম সোনাপুর অত্যন্ত উঁচু গ্রাম, তার পরেও এতো পানি তা কল্পনাও করতে পারিনি। উপায়ান্তর না দেখে বৃহস্পতিবার ভোরে পরিবারের ৫ সদস্য নিয়ে এক কাপড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এসে পৌঁছেছি। এখনও বাড়িতে পানি। কবে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরবো তা জানি না। কী হবে সোনার সংসারের।

শনিবার (২৪ আগস্ট) কথা হয় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা অপর বিধবা নারী সোনাপুর গ্রামের ফিরোজা বেগম সঙ্গে। তিনি বলেন, বুধবার রাতটি ছিল আমাদের জন্য বিভীষিকাময় রাত। রাত যতই গভীর হচ্ছিল ভারি বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতও হচ্ছিল। পানিও হু হু করে বেড়ে চলছে। মনে করেছিলাম সেই রাতই শেষ রাত। আল্লাহ দয়া করছে বলে এখনও বেঁচে আছি। পরদিন বৃহস্পতিবার কলার ভেলায় করে বাতিসা আশ্রয়কেন্দ্রে এসে আশ্রয় নিয়েছি। ঘরবাড়ির অবস্থা এখন কেমন তাও জানি না।

আনোয়ারা, মনোয়ারা ও ফিরোজার মতো এক হাজারেরও অধিক পরিবার বানভাসি হয়ে আশ্রয় নিয়েছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাতিসা ইউনিয়নের বাতিসা গার্লস স্কুলে। অনেকে তাদের ফেলে আসা বাড়িঘর নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। পানি কবে নামবে তা তারা জানেন না। এক কাপড়ে আশ্রয় নিয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। বেঁচে আছেন এতেই তারা আল্লাহর কাছে জানাচ্ছেন শুকরিয়া।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here