সিডনিতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর প্রাণহানি ঘটেছে। গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় বেলা ১১ টায় সিডনির কোগারাহ এলাকায় উবার চালক বিজয় পালের মোটর সাইকেলের সঙ্গে একটি গাড়ির সম্মুখ সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ বলেছে বিজয় পাল ডেলিভারি করতে যাওয়ার সময় রেড লাইট ক্রস করে দুর্ঘটনায় পতিত হয় ।
বিজয় পাল প্রায় দেড় বছর ধরে উবার ইটস-এর খণ্ডকালীন চাকুরী করতেন।
দু এক দিনের মধ্যে মৃতদেহ পাওয়া গেলে সিডনিতেই তার সৎকার করা হবে।
দুর্ঘটনার পর ২৭ বছর বয়সী ওই যুবককে কোগারাস্থ সেইন্ট জর্জ হাসপাতালে নেওয়া হয়। বিকালে হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। দুর্ঘটনায় মৃত বিজয় পালের বোন শিমুল পাল এসবিএস বাংলাকে বলেন , তিনি ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়াতে এসেছেন এবং পড়াশোনা শেষে এখন পার্মানেন্ট রেসিডেন্সির জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, তার ভাই বিজয় পাল ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়াতে আসেন এবং ইউনিভার্সিটি অফ টেকনলজি সিডনি-তে মাস্টার্সের শিক্ষfর্থী ছিলেন।
আমার ভাই ২০১৮ সালে আসছিল। আমি আসি ২০১৪ সালে। আমার পিআর (পারমানেন্ট রেসিডেন্সি) হয় নি এখনও।
বিজয় পাল উবার ইটস-এর ডেলিভারি ম্যান হিসাবে খণ্ডকালীন চাকুরী করতেন। প্রায় দেড় বছর ধরে তিনি এই কাজে করছেন বলে জানান তার বোন শিমুল পাল।
ও কিন্তু চলন্ত, উবার চালানো অবস্থায় মারা গেছে। ও কিন্তু উবারে অর্ডার নিয়ে, ওর ব্যাগে উবারের অর্ডার ছিল, ম্যাকডোনাল্ডস-এর অর্ডার ছিল।
দুর্ঘটনা সম্পর্কে শিমুল পাল জানান, তিনি দুর্ঘটনার বিস্তারিত কিছু জানেন না। তবে তিনি উল্লেখ করেন যে, পুলিশ তাকে বলেছে বিজয় পাল ডেলিভারি করতে যাওয়ার সময় রেড লাইট ক্রস করে দুর্ঘটনায় পতিত হয়।
হ্যাঁ, পুলিশ তো বলল যে, ঐ রেডলাইট বিজয় ব্রেক করেছে। বিজয়েরই ভুল। কিন্তু, আমরা আসলে সঠিক জানি না এখনও। ওরা ডিটেইল দেয় নাই।
বিজয় পালের আকস্মিক মৃত্যুতে সিডনির বাংলাদেশী কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে আসে। শিমুল পাল বলেন, লাশ কবে দেওয়া হবে তিনি সঠিক জানেন না। তবে, দু এক দিনের মধ্যে মৃতদেহ পাওয়া যেতে পারে। তখন সিডনিতেই তার সৎকার করা হবে।
দেশে না, আমরা এখানেই করবো। দেশে পাঠানোর মতো অবস্থা নেই আমাদের।
পরিবারের পক্ষ থেকে যদি মৃতদেহ বাংলাদেশে পাঠানোর চিন্তা করা হয়, তাহলে সে ব্যাপারে বাংলাদেশ হাই কমিশন এর সিডনি কনস্যুলেট অফিস এর কনসাল জেনারেল খন্দকার মাসুদুল আলম বলেন, তারা প্রয়োজনীয় পেপার ওয়ার্কস এর সহায়তা প্রদান করবেন।
বিজয় পাল বাংলাদেশের টাংগাইল জেলার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি ঢাকার আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল এবং ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতক পাশ করেছেন। বিজয় পাল বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে সন্তান ছিলেন। ছেলের এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে পিতা – মাতা শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন।