বাংলাদেশে সহিংসতার ঘটনা জাতিসংঘের নেতৃত্বে তদন্তের দাবি জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার সংগঠন জাস্টিস ফর বাংলাদেশ। এ নিয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড লেমিকে একটি চিঠি দিয়েছে সংগঠনটি।
বুধবার (১৪ আগস্ট) চিঠিটি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। যেখানে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানানো হয়।
একই সঙ্গে শেখ হাসিনার বিচারকার্য সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত নিজেদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন বলে জানান সংগঠনটির তিন সমন্বয়ক। তারা হলেন- আন্তর্জাতিক আইনজীবী ব্যারিস্টার মাইকেল পোলাক, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, দক্ষিণ এশিয়ার সাবেক প্রধান আব্বাস ফয়েজ এবং ব্রডকাস্টার এবং বাংলাদেশবিষয়ক রাজনীতি ও গণতন্ত্র বিশ্লেষক আতাউল্যাহ ফারুক।
সংগঠনটির দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর গণহত্যা হয়েছে এবং তা তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশে। ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশি শাসকের আদেশের বাইরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, এমন কোনো প্রমাণ নেই। এ ছাড়া ১২ আগস্ট প্রকাশিত একটি ভিডিওতে একজন বাংলাদেশি পুলিশ অফিসারকে পূর্ববর্তী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। সেখানে তিনি বলছেন, ‘আমরা যখন গুলি করি, তখন একজন মারা যায় এবং অন্য একজন আহত হয়। শুধু একজন পড়লেও বাকিরা যায় না স্যার। এটা, স্যার, সবচেয়ে বড় আতঙ্কের।’
আরও বলা হয়েছে, তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা এই মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দোষী হতে পারেন। এ ছাড়াও হাসিনা শাসনামলে ৬০০ জনেরও বেশি ব্যক্তি গুমের শিকার হন। তাদের পরিবার থেকে তুলে নিয়ে গোপনে আটকে রাখা হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ৬ আগস্টের পর গোপন টর্চার সেল থেকে ফিরে এসেছেন অনেকে। দিয়েছেন তাদের ওপর নির্যাতনের লোমহর্ষক বর্ণনা। তারা এখন বেআইনি অপহরণ, জোরপূর্বক গুম এবং নির্যাতনের মতো মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সম্পর্কে প্রমাণ সরবরাহ করতে পারেন।
সংগঠনটি জানায়, আন্তর্জাতিক তদন্ত এবং বিচারের জন্য সবচেয়ে কার্যকর সংস্থা হলো আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশ দুই দেশই আইসিসির সদস্য হওয়ায় সংস্থাটির মাধ্যমে শেখ হাসিনা ও তার সহযোগী কর্তা ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলেও আশা ব্যক্ত করে জাস্টিস ফর বাংলাদেশ।