Home International ইউরোপকে সরাসরি হুমকি দিলেন সৌদি যুবরাজ

ইউরোপকে সরাসরি হুমকি দিলেন সৌদি যুবরাজ

96
0

আঞ্চলিক রাজনীতিতে মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমাদের সবচেয়ে বড় খুঁটি সৌদি আরব। কিন্তু যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদি আরবের ক্ষমতার দৃশ্যপটে আসার পর থেকে, পশ্চিমাদের সেই আস্থা নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। রিয়াদকে এড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্যে খবরদারি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তাই বিকল্প কোনো শক্তির উত্থান হওয়ার আগ পর্যন্ত রিয়াদের বিকল্প নেই পশ্চিমাদের কাছে।

পশ্চিমের কাছে সৌদির গুরুত্ব খুব ভালোভাবেই জানেন যুবরাজ মোহাম্মদ। তাই পশ্চিমাদের রীতিমতো নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছেন তিনি। এবার ইউরোপের দেশগুলোকে সরাসরি হুমকিই দিলেন সৌদি যুবরাজ।

মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে পশ্চিমাদের সঙ্গে সৌদি আরবের প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব রয়েছে। এসব ইস্যু নিয়ে যেসব দেশ মাথা ঘামায় না, সেসব দেশের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেছে রিয়াদ। সৌদি আরবের এই বন্ধু তালিকায় এখন সবার ওপরে যুক্তরাষ্ট্রের চিরবৈরী দেশ রাশিয়া।

দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গোটা বিশ্বই এখন স্পষ্ট দুই ভাগে বিভক্ত। এরই ধারাবাহিকতায় একসময় পশ্চিমা ব্লকে থাকা অনেক দেশের মতো সৌদি আরবও হুমকি ছড়াচ্ছে রাশিয়ার পক্ষে।

মস্কোর স্বার্থ রক্ষায় পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে এবার সাফ কথা সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের। ইউক্রেন যুদ্ধে জের ধরে রাশিয়ার প্রায় ৩০ হাজার কোটি ডলারের সম্পদ বাজেয়াপ্তের হুমকি দেয় শিল্পোন্নত দেশগুলো জোট জি-সেভেন। এরই পাল্টা জবাবে ইউরোপের দেশগুলোর ঋণ বিক্রির হুমকি দিয়েছেন যুবরাজ মোহাম্মদ। যা প্রচার করছে সৌদির অর্থ মন্ত্রণালয়।

সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, সৌদি আরব আসলে সুনির্দিষ্টভাবে ফ্রান্সকে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কয়েক মাস ধরেই রিয়াদের মধ্যে এমন উদ্বেগ ছড়িয়েছে, ক্রেমলিনের সম্পদ জব্দ করতে পারে পশ্চিমারা।

গেল এপ্রিলে পলিটিকো জানায়, চীন ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে মিলে সৌদি আরব অনেকটা চুপিসারে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে, যেন রাশিয়ার সম্পদ জব্দ না করা হয়। কিন্তু পশ্চিমাদের টলাতে না পেরে এবার চোখে চোখ রেখে কথার বলছে সৌদি আরব।

গেল জুনে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও জাপানের সমন্বয়ে গঠিত জি-সেভেন, রাশিয়ার সম্পদ থেকে হওয়া লাভের টাকা থেকে ইউক্রেনকে ৫০ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়। তবে পশ্চিমা দেশে থাকা রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রায় ৩২২ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের পুরোপুরি জব্দের বিষয়ের মতো পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকে গ্রুপ সেভেন।

ব্লুমবার্গ বলছে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য রাশিয়ার সব সম্পদ জব্দের পক্ষে হলেও সৌদির হুমকির কারণে ইউরোপের অন্য দেশ কিছুটা পিছিয়ে গেছে।

সৌদি আরবের আশঙ্কা মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে রাশিয়ার ওপর এখন যে খড়গ নেমে আসছে, একদিন হয়ত পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গেও এমনটাই করবে পশ্চিমারা। আর তাই খুব দ্রুত বন্ধু হয়ে উঠেছে যুবরাজ মোহাম্মদ ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

তেল রপ্তানিতে নিজের ক্ষতির বিনিময়ে রাশিয়াকে ব্যবসার সুযোগ করে দিয়েছেন যুবরাজ মোহাম্মদ। একইভাবে সৌদি যুবরাজের কথায় ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের অস্ত্র দেওয়া থেকে বিরত থেকেছেন পুতিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here