যুক্তরাষ্ট্রের ইশারায় নাচলেও কিছু করার আগে দুবার ভেবে নেয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। ইরানের ভয়েই অনেক আরব দেশ চাইলেও প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পরম মিত্র ইসরায়েলের তোষামোদি করতে সাহস পায় না। এবার তেমনটাই ঘটছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে।
ইরানের ভয়ে আমিরাতের সরকার যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। ইরান ও দেশটির সমর্থিত মিলিশিয়াদের হামলার ভয়েই আমিরাত পিছু হটেছে।
আরব সেন্টার ওয়াশিংটন ডিসির নন-রেসিডেন্ট ফেলো গ্রেগরি আফতানডিলিয়ান এক নিবন্ধে লিখেছেন, আবুধাবির আল দাফরা বিমানঘাঁটি ব্যবহার করে ইরানের প্রক্সিদের ওপর হামলা চালাতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ইরান ও তার মিত্র মিলিশিয়ারা সংযুক্ত আরব আমিরাতে হামলা চালাতে পারে, এমন ভয়ে ওয়াশিংটনকে না করে দিয়েছে দেশটি।
উপায় না দেখে কাতারের আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে অতিরিক্ত যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের দীর্ঘ সংঘাতে চাপে পড়েছেন জো বাইডেন। ইসরায়েল হামাসকে হারাতে পারছে না, আর বাইডেন নেতানিয়াহুকে বোঝাতে পারছেন না।
এমতাবস্থায় আবুধাবি থেকে বিমান হামলা চালাতে চেয়েছিলেন বাইডেন। কিন্তু ব্যবসায় ক্ষতির শঙ্কায় পিঠটান দিয়েছে আমিরাত সরকার। তাদের ভয় এতে তারা সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।
জনমতের বিপরীতে গিয়ে ২০২০ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। কিন্তু গেল বছরের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন সাধারণ আমিরাতিদের মনে অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে।
এখন ব্যবসার পরিবেশ ঠিক রাখতে আতঙ্কে ভুগছেন আমিরাতের কর্মকর্তারা। কী করবেন বুঝতে পারছেন না তারা।
আবার যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ইরান কাউকেই চটাতে চায় না আবুধাবি। সব মিলিয়ে আমিরাতের অবস্থা শ্যাম রাখি না কূল রাখি।
কয়েক দশক ধরে হরমুজ প্রণালির ৩টি দ্বীপ নিয়ে আমিরাত-ইরানের দ্বন্দ্ব চলছে। তারপরও দেশ দুটির মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কও রয়েছে।
এত দিন পর্যন্ত দেশটিতে মার্কিন সামরিক বাহিনীর উপস্থিতিকে নিজ দেশের জন্য সুরক্ষা কবজ হিসেবে মনে করে আসছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। কিন্তু গেল এক দশকে তেহরান-আবুধাবির সম্পর্ক নানা উত্থান-পতন দেখেছে।
তবে আঞ্চলিক সংঘাতের মাঝে পড়ে প্রাপ্তির চেয়ে হারানোর ভয় বেশি, এমন শঙ্কায় হাত গুটিয়ে বসে থাকতে চাইছে আবুধাবি।