মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে একদিনে ২৯ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি কারাগারেই ২৬ জনকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।
নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস জানায়, গত বুধবার (৭ আগস্ট) তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। খুন, মাদক ও ধর্ষণের অপরাধে আসামিদের এ শাস্তি দেওয়া হয়। এদের মধ্যে ২৬ জনকে তেহরানের বাইরে খারাজের গেজেলহেসার কারাগারে এবং তিনজনকে কারাজ শহর কারাগারে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। দণ্ড কার্যকর হওয়াদের মধ্যে দুজন আফগানিস্তানের নাগরিক।
প্রসঙ্গত, ইরানে গত বছর বিভিন্ন অপরাধের দায়ে কমপক্ষে ৮৩৪ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এই সংখ্যা গত আট বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এবং দুই দশকের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
ইরানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) এবং প্যারিসভিত্তিক টুগেদার অ্যাগেইনস্ট দ্য ডেথ পেনাল্টি (ইসিপিএম)। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর ইরানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরিমাণ ৪৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালে পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে হওয়া বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় ফাঁসি দেওয়ার সংখ্যা এত বেড়েছে।
২০২২ সালের বিক্ষোভ চলাকালীন নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ৯ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। অবশ্য গত বছর অন্যান্য অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হারও বেড়েছে। ২০২৩ সালের মোট মৃত্যুদণ্ডের অর্ধেক মাদকসংক্রান্ত মামলায় দেওয়া হয়েছে। ওই বছর ইরানে ৪৭১ জনকে এই ধরনের অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ইরান হিউম্যান রাইটসের পরিচালক মাহমুদ আমিরি মোগাদ্দাম মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এ সংখ্যাকে ‘বিস্ময়কর’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সমাজে ভয় জিইয়ে রেখেই ক্ষমতায় থাকতে পারবে বর্তমান সরকার। আর এ ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড হলো সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।