বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারির এক দিনের মাথায় সুইডেনে প্রথম এমপক্স আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন। তার দেহে এমপক্সের ভয়ংকর ধরন পাওয়া গেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, আফ্রিকা মহাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে এমপক্স ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ছে।
সুইডেনে রোগী শনাক্তের পর ইউরোপে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আফ্রিকার মতো ইউরোপেও এটি মহামারি আকার ধারণ করলে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের মতো এমপক্স দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে।
সুইডিশ সরকার বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ঘোষণা দিয়েছে, আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে ‘ক্লেড আই’ ধরন শনাক্ত হয়েছে। এটি ভয়ংকর সংক্রামক। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে সহজে সুস্থ মানুষ সংক্রামিত হতে পারেন। আফ্রিকায় এ ধরনটিই ব্যাপকহারে আক্রান্তের জন্য দায়ী।
সরকার আরও বলছে, যদিও একজন রোগী শনাক্ত হয়েছেন কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে, আরও অনেকে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত। এ অঞ্চলে আগামী দিনে আরও এমপক্স আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে আসবে।
সুইডিশ মহামারি বিশেষজ্ঞ ম্যাগনাস গিসলেন একটি বিবৃতিতে বলেছেন, আক্রান্ত ব্যক্তি আফ্রিকায় ভ্রমণের সময় এমপক্সে আক্রান্ত হন। তিনি যে অঞ্চলে ভ্রমণ করেন সেখানে ‘ক্লেড আই’ ধরনের প্রাদুর্ভাব রয়েছে। ওই ব্যক্তি স্টকহোমে ফিরে চিকিৎসা সহায়তা চান। তাকে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রেখে যত্ন নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এখন এই আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে অপরের মধ্যে ভাইরাসটি ছড়ানো সুযোগ নেই। ইউরোপীয় সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল মনে করছে, সুইডেনের বর্তমান অবস্থায় গণমানুষের মধ্যে এমপক্স ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কিন্তু সবাই সতর্ক রয়েছে।
প্রসঙ্গত, এমপক্স রোগের জন্য দায়ী মাঙ্কিপক্স ভাইরাস। এটি আগে মাঙ্কিপক্স নামেই পরিচিত ছিল। কিন্তু পরিবর্তিত ধরনের কারণে বর্তমানে ভাইরাসটি এমপক্স পরিভাষায় চিহ্নিত করা হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে এমপক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। দেশটিতে ভাইরাসটি দ্রুত সংক্রমিত হয়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এখন ব্যাপকহারে প্রতিবেশী দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (১৪ আগস্ট) দুই বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো এমপক্সের কারণে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হলো। এর আগে জরুরি কমিটি বৈঠক শেষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসোসকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দেয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতার লক্ষ্য হলো- গবেষণা, অর্থায়ন, আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং রোগ নিয়ন্ত্রণে সবার সহযোগিতা ত্বরান্বিত করা। এ বিষয়ে টেড্রোস বলেন, এটি স্পষ্ট যে- এই প্রাদুর্ভাব বন্ধ করতে এবং জীবন বাঁচাতে একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া অপরিহার্য।