চলতি বছরে ফরাসি উপকূল থেকে ছোট নৌকায় চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ব্রিটেনে পৌঁছেছে ১০ হাজার ১৭০ জন অনিয়মিত অভিবাসী। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ পরিসংখ্যান জানিয়েছে।
এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক আগামী ৪ জুলাই যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন। অভিবাসন এবারের ব্রিটিশ নির্বাচনী প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।এমন পরিস্থিতিতে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে রেকর্ডসংখ্যক অনিয়মিত অভিবাসীর দেশটিতে পৌঁছনোর সংবাদ বিদায়ি সরকারের জন্য বিব্রতকর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২৬ মে পর্যন্ত মোট ১০ হাজার ১৭০ জনেরও বেশি অনিয়মিত অভিবাসী উত্তর ফ্রান্স উপকূল থেকে ব্রিটেনে পৌঁছেছে। এই সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি। ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার জানিয়েছে, সব শেষ শুক্রবার ২৮৮ জন অনিয়মিত অভিবাসী ইংল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলে এসে পৌঁছেছে।চলতি বছর ব্রিটেনে যাওয়া অনিয়মিত অভিবাসীদের বড় একটি অংশ আফগানিস্তান, ইরান ও তুরস্ক থেকে গেছে।
রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ক্ষমতায় আসার পর অনিয়মিত অভিবাসীদের আগমন বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি এটিকে তার প্রধান অগ্রাধিকার বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর লক্ষ্যে তিনি আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডায় পাঠানোর বিল বাস্তবায়ন করতে গত বছর থেকে চেষ্টা করে আসছিলেন।ঋষি সুনাক বৃহস্পতিবার স্বীকার করেছেন, বিতর্কিত রুয়ান্ডা প্রকল্পটি সম্ভবত আগামী নির্বাচনের আগে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি রুয়ান্ডার উদ্দেশ্যে প্রথম ফ্লাইটের উড্ডয়ন দেখতে চান।
এ ছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি শনিবার এক্সে বলেন, ঋষি সুনাক অভিবাসীদের নৌকা থামাতে সাহসী পদক্ষেপ নেবেন।
অন্যদিকে সামনের নির্বাচনে জনমত জরিপে ক্ষমতাসীন রক্ষণশীলদের চেয়ে ২০ পয়েন্ট এগিয়ে আছে ব্রিটিশ লেবার পার্টি। দলটি জানিয়েছে, তারা ক্ষমতায় এলে রুয়ান্ডা পরিকল্পনার মতো ব্যয়বহুল ও অকার্যকর উদ্যোগ দিয়ে অভিবাসীদের বিতাড়িত করার নীতি বাতিল করবে।
লেবার পার্টি নির্বাচনে জিতলে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হবেন বর্তমান বিরোধীদলীয় নেতা কেয়ার স্টারমার। তিনি সম্প্রতি এক বক্তব্যে বলেছেন, ‘সরকার আমাদের সীমান্তের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।’
যুক্তরাজ্যের সরকারি পরিসংখ্যান দপ্তর অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) গত সপ্তাহে জানিয়েছে, ২০২৩ সালে ব্রিটেনে নিট অভিবাসন আগের বছরের তুলনায় ৬০ হাজার বা ১০ শতাংশের মতো কমেছে। নিট অভিবাসন দিয়ে কোনো দেশে নতুন করে যাওয়া মানুষ ও দেশটি ছেড়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যার পার্থক্যকে বোঝানো হয়।
‘সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের’ ধোঁয়া তুলে ব্রেক্সিটের মধ্য দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে আসে যুক্তরাজ্য। কিন্তু আট বছর পেরিয়ে গেলেও যুক্তরাজ্যে রাজনীতিতে অভিবাসন এখনো প্রধান আলোচ্য বিষয়।