সম্পত্তির বিরোধের জের ধরে মিফতাহুল জান্নাত তামারা নামের ১০ বছরের এক শিশুকে গরম পানিতে ঝলসে দেওয়া হয়েছে। মৃত্যু যন্ত্রণা নিয়ে শিশুটি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টায় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মোহাম্মদ কোম্পানির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে একই বাড়ির আমির হোসেনের সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ ছিল শিশু তামারার বাবা গোলাম সারওয়ার দুলালের পরিবারের। তারই সূত্র ধরে গত ১৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুনরায় বিবাদে লিপ্ত হয় আমির হোসেনের পরিবার। ঝগড়ার এক পর্যায়ে পরিকল্পিতভাবে গরম পানি নিক্ষেপ করে গোলাম সারওয়ার দুলাল এবং তার ১০ বছর বয়সী মেয়ে মিফতাহুল জান্নাত তামারাকে ঝলসে দেওয়া হয়। এতে ছোট্ট মেয়েটির মুখ, হাত, তলপেটসহ শরীরের অর্ধেকের বেশি অংশ এবং দুলাল মিয়ার ঘাড়সহ শরীরের কিছু অংশ ঝলসে যায়।
পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় দ্রুত তাদের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অতিরিক্ত ঝলসে যাওয়ায় সেখান থেকে তাদের নোয়াখালী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি দেখে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
এর আগেও ভুক্তভোগী গোলাম সারওয়ার দুলালের পরিবারের ওপর নানাভাবে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে থানা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আমির হোসেনের ভগ্নিপতি মোজাম্মেল হক খোকন আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল দগ্ধ শিশুটির পরিবারকে। মোজাম্মেল হক খোকনের বিরুদ্ধে এলাকায় ডাকাতিসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।
শিশুটির মা দৌলত আরা বেগম জানান, তার ফুটফুটে একমাত্র মেয়ে সন্তানের জীবন যারা এভাবে শেষ করে দিয়েছে, তাদের যেন কঠিন শাস্তির আওতায় আনা হয়। এছাড়া অতীতেও তার উপর লাঠিসোঁটা নিয়ে একাধিকবার হামলা ও নানা নির্যাতনের কথা জানান তিনি।
এরকম অমানবিক অত্যাচার-নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে এবং এমন ন্যক্কারজনক হামলার বিচার ও আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার জন্য নোয়াখালী জেলা প্রশাসক, নোয়াখালী পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছে মেয়েটির পরিবার।