Home International ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজার ছাড়াতে পারে: ল্যানসেট

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজার ছাড়াতে পারে: ল্যানসেট

69
0

ফিলিস্তিনের গাজায় ৯ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলায় নিহত মানুষের প্রকৃত সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে এক চিঠিতে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে এ চিঠি প্রকাশিত হয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে নজিরবিহীন রকেট হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর প্রতিশোধ হিসেবে ওই দিন থেকেই গাজায় নারকীয় তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ৩৮ হাজার ১৫৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অনেকে।

চিঠিতে গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে নিহত ব্যক্তির যে সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে, সম্ভবত সেটি নাটকীয়ভাবে কম। ইসরায়েলি হামলায় এ উপত্যকার বিভিন্ন স্থাপনার ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা হাজারো মানুষ এবং খাবার, চিকিৎসাসেবা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার সংকটে পরোক্ষভাবে যে বহু মানুষ মারা গেছে, তাদের ওই হিসাবে বিবেচনায় আনা হয়নি।

গাজা উপত্যকার বড়সংখ্যক অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় নিহত ব্যক্তিদের সংখ্যা হালনাগাদ করতে মূলত গণমাধ্যমের সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। চিঠিতে বলা হয়, নিহত মানুষ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে এটি নিশ্চিতভাবেই বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে।

বিশেষজ্ঞরা চিঠিতে বলেন, সংঘাতের ভয়াবহতার ব্যাপকতা; স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো বিধ্বস্ত হওয়া; খাবার, পানি ও আশ্রয়ের তীব্র সংকট; লোকজনের নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যেতে না পারা; ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক জাতিসংঘ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএকে অর্থ দেওয়া বন্ধ করার কারণে গাজায় মৃত মানুষের মোট সংখ্যা অনেক বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। উপত্যকাটিতে এখন গুটিকয়েক ত্রাণসহায়তা সংস্থা সক্রিয় আছে।

গাজায় ৯ মাস ধরে নির্বিচার বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ফাইল ছবি: রয়টার্স

বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারের মতো মরদেহ চাপা পড়ে আছে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গাজা উপত্যকার ৩৫ শতাংশ ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। এর আগে গত মে মাসে গাজার নাগরিক সুরক্ষা সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছিল, উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনার নিচে প্রায় ১০ হাজার মরদেহ চাপা পড়ে আছে। এসব মরদেহে পচন ধরায় রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ছে।

চিঠিতে বলা হয়, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে নিহত ব্যক্তির যে সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে, সম্ভবত সেটি নাটকীয়ভাবে কম। ইসরায়েলি হামলায় এ উপত্যকার বিভিন্ন স্থাপনার ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা হাজারো মানুষ এবং খাবার, চিকিৎসাসেবা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার সংকটে পরোক্ষভাবে যে বহু মানুষ মারা গেছে, তাদের ওই হিসাবে বিবেচনায় আনা হয়নি।

যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা এয়ারওয়ারস বিশ্বের যুদ্ধ ও সংঘাতপ্রবণ এলাকায় বেসামরিক লোকজনের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান করে থাকে। সংস্থাটিকে উদ্ধৃত করে চিঠিতে বলা হয়, ইসরায়েলি হামলায় নিহত এমন মানুষদের গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে, যাদের নাম–পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

গাজায় খান ইউনিসের একটি বিদ্যালয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় আহত একজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। গতকাল মঙ্গলবার গাজার নাসের হাসপাতালে। ছবি: রয়টার্স

তবে হামলায় নিহত মানুষের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করা হয় চিঠিতে।

গাজা উপত্যকার বড়সংখ্যক অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় নিহত ব্যক্তিদের সংখ্যা হালনাগাদ করতে মূলত গণমাধ্যমের সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। চিঠিতে বলা হয়, নিহত মানুষ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে এটি নিশ্চিতভাবেই বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে। এখন অশনাক্ত হওয়া মরদেহ নিয়ে আলাদা তালিকা তৈরি করছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা ও মানবিক ত্রাণ সরবরাহ শুরু করার আহ্বান জানানো হয়েছে এ চিঠিতে। উপত্যকাটির বাসিন্দাদের দুর্দশা–কষ্টের মাত্রা ও প্রকৃতি নিয়ে সঠিক তথ্য নথিভুক্ত করার ওপরও চিঠিতে জোর দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, ঐতিহাসিকভাবে জবাবদিহি নিশ্চিত করা ও যুদ্ধের প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানতে সঠিক তথ্যের নথিভুক্তিকরণ গুরুত্বপূর্ণ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here