কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বছরের পর বছর বিশ্বকে শাসন করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। ঐতিহাসিকভাবেই দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। একসময় প্রতাপশালী ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের উপনিবেশ ছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ব্রিটিশদের হারিয়ে স্বাধীনতা লাভ করলেও দুই দেশের সম্পর্কে এতটুকু ভাটা পড়েনি। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যেন, তা আরও জোরালো হয়েছে। তবে সম্প্রতি এক ঘটনায় দুই দেশ বিবাদে জড়িয়েছে। সেই জল কতদূর গড়ায়, এখন তা দেখার অপেক্ষা।
আলোচিত অঞ্চলটি নিয়ে শুনানি হওয়ার কথা ছিল ব্রিটিশ আদালতে। তবে সম্প্রতি ওই তৎপরতা ব্লক বা বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ দেখিয়ে ওয়াশিংটন এমনটা করেছে বলে সরকারি নথিপত্রে দাবি করা হয়েছে। বিবিসি জানায়, ডিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপে একদল অভিবাসীকে অবৈধভাবে আটকে রাখা হয়েছে কিনা, তা নিয়ে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান ওশেন টেরেটরির সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হওয়ার কথা ছিল।
এই দ্বীপে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের গোপন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এখানে যে কেউ চাইলেই প্রবেশ করতে পারে না। অর্থাৎ এই দ্বীপটি খুবই গোপনীয়তা মধ্যে রেখেছে দেশ দুটি। গেল সপ্তােহ যুক্তরাষ্ট্র জানায়, ওই দ্বীপে অভিবাসীদের প্রতিনিধিত্ব করতে আইনজীবীদের এবং বিবিসির ‘প্রেস সদস্যদের’ ‘অনুমতি প্রত্যাহার’ করছে তারা। ওয়াশিংটন জানায়, তারা শুনানির জন্য মার্কিন সামরিক ফ্লাইটে কাউকে চড়তে দেবে না। এমনকি তাদের আবাসন, পরিবহন ও খাদ্যের ব্যবস্থাও করবে না।
গেল ২০২১ সালের অক্টোবরে কয়েক ডজন অভিবাসী ডিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপে পৌঁছায়। তাদের দাবি ছিল, নিপীড়ন থেকে বাঁচতে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তারা। এজন্য রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে কানাডা যেতে চাইছিলেন। কিন্তু ডিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপের কাছে তাদের নৌকার সমস্যা দেখা দেয়। শুনানির অংশ হিসেবে আইনজীবী ও মিডিয়ার কর্মীদের অভিবাসীদের বন্দিশিবির ও ডিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপের আরও কয়েকটি স্থানে যাওয়ার কথা ছিল। এ নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের যত আপত্তি।
যুক্তরাজ্যকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের আপত্তির কথা গেল ৩ জুলাই জানিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ওই ঘাঁটিতে আইনজীবী ও প্রেসের এমন ভিজিটে নিরাপত্তা ও কার্যকর অপারেশনের ঝুঁকি রয়েছে। যদিও এর আগে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছিল, তারা অভিবাসীদের বন্দিশিবির, এর আশপাশের সমুদ্রসৈকত ও একটি চ্যাপেল ঘুরে দেখার অনুমতি দেবে। তবে সিনেমা থিয়েটার, সেলুন, বোলিং সেন্টার ও এয়ারপোর্ট টার্মিনালের মতো স্থাপনায় বেসামরিক নাগরিকদের যেতে দেওয়া হবে না।