Home Bangladesh চেয়ারে বসেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের আশ্বাস মেয়র টিটুর

চেয়ারে বসেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের আশ্বাস মেয়র টিটুর

83
0

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (মসিক) দায়িত্ব বুঝে নিলেন নবনির্বাচিত মেয়র ইকরামুল হক টিটু। নির্বাচিত হওয়ার প্রায় ৪ মাস পর মেয়রের চেয়ারে বসলেন ইকরামুল হক টিটু। গত ২০ জুন নবনির্বাচিত পরিষদ দায়িত্ব গ্রহণ করে।

রোববার (৩০ জুন) সকাল ১১টায় শহীদ শাহাবুদ্দীন মিলনায়তনে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের নব নির্বাচিত পরিষদের পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় ফুল দিয়ে নতুন মেয়রকে বরণ করে নেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

পরে দুপুর সাড়ে ১২টায় নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলেন মেয়র ইকরামুল হক টিটু। মেয়র ছাড়াও সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডের ৩৩ জন সাধারণ কাউন্সিলর এবং ১১ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। পরে কার্যালয়ের নিজ আসনে বসেন নবনির্বাচিত মেয়র ইকরামুল হক টিটু।

ইকরামুল হক টিটু বলেন, আমরা জনগণকে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, আমাদের কাছে জনগণের প্রত্যাশাও অনেক। সেসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সচেষ্ট হতে হবে। বর্তমান আর্থ-সামাজিক অবস্থায় রাতারাতিই সবকিছু বদলে দেওয়া সম্ভব না, তবে সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করা জরুরি এবং সব সময়ে আমাদের আচরণ যেন হয় জনকল্যাণমুখী।

তিনি তার বক্তব্যে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন উপহার দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে এবং তাকে পুনরায় মেয়র পদে নির্বাচিত করার জন্য নাগরিকবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, আমার চেয়ারে বসে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে ময়মনসিংহের মানুষের জন্য কাজ করব। নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, সেগুলো আমি অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। পরিকল্পিত উদ্যোগে দীর্ঘদিনের এ সমস্যার সমাধান করতে চাই। পাশাপাশি দুর্নীতিমুক্ত আধুনিক শহর গড়তে সবার সহযোগিতা কামনা করি।

তিনি আরও বলেন, কাজ করতে গিয়ে ছোটখাটো ভুল হতেই পারে, তা আপনারা ধরিয়ে দেবেন। এটাই হবে আপনাদের নৈতিক দায়িত্ব। নির্বাচনের আগে যা কথা দিয়েছি তা রাখতে চেষ্টা করব। আমি মেয়র বা নগরপিতা হতে আসিনি। জনগণের সেবক হতে চাই। সেবা করতে এসেছি এবং তাই করব। আমার নেতাকর্মীদের সঙ্গে বসব। আমি কাউন্সিলরদের সঙ্গে বসব। এ ছাড়াও জনগণের সঙ্গে বসব। সাংবাদিকদের নিয়ে বসব। কোথায় কোন সমস্যা রয়েছে সবার পরামর্শে তা সমাধানের চেষ্টা করব। এ ছাড়া তিনি যানজট, জলাবদ্ধতা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, নাগরিক সেবা বৃদ্ধি, নাগরিক অভিযোগ প্রতিকার, ফুটপাত দখলমুক্তকরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন। ময়মনসিংহ একটি পুরোনো এবং ঘনবসতিপূর্ণ শহর। এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখেই আমাদের সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট হতে হবে। রাস্তার পাশে অবৈধ বাজার, ভ্রাম্যমাণ বাজার বন্ধ করা, নির্ধারিত জায়গা ছেড়ে বাড়ি করা নিশ্চিত করতে হবে।

এ ছাড়া সড়ক প্রশস্তকরণের কাজগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। মেয়র বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে টেকসই করতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতি মাসে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করার জন্য প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন।

এ ছাড়াও মেয়র বলেন, মশক নিধন, খালকে দখলমুক্ত ও পরিষ্কার রাখতেও নাগরিকবৃন্দের সহযোগিতা প্রয়োজন। সভা শেষে ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফারুক হাসান এবং বিলুপ্ত পৌরসভার কাউন্সিলর লিয়াকত আলী এবং লাল মিয়া লাল্টুর মৃত্যুতে দোয়া করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সিনিয়র প্রধান নির্বাহী ইউছুফ আলী, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মিঞা, সচিব আরিফুর রহমান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এইচকে দেবনাথ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সেজ্যোতি ধর, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মাজহারুল ইসলাম, জনসংযোগ কর্মকর্তা শেখ মহাবুল হোসেন রাজীব, খাদ্য ও স্যানিটেশন কর্মকর্তা দীপক মজুমদারসহ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ৯ মার্চ ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে ইকরামুল হক টিটু ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬০৪ ভোট পেয়ে বিশাল বিজয় লাভ করেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাতি প্রতীক নিয়ে সাদেকুল হক খান মিল্কী টজু পেয়েছিলেন ৩৫ হাজার ৭৬৩ ভোট। এরপর গত ৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কাছে শপথ নিয়েছেন কুমিল্লা ও ময়মনসিংহের নবনির্বাচিত দুই মেয়র এবং পাঁচ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। একই দিন শপথ নেন দুই সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here