Home Bangladesh ঢাবির বন্ধ থাকা হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ শিক্ষার্থীদের 

ঢাবির বন্ধ থাকা হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ শিক্ষার্থীদের 

65
0

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলের সিলগালা করা তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেছেন আন্দোলনরত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (৪ আগস্ট) বেলা ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, বঙ্গবন্ধু হল, জসীমউদদীন হল, মাস্টারদা সূর্যসেন হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, স্যার এ এফ রহমান হল, নবাব স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, সায়েন্সের তিন হল ও কবি সুফিয়া কামাল হলসহ প্রায় অধিকাংশ হলেই শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করেন। এ হলগুলোর মধ্যে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও জসিমউদদীন হলের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন তারা। বাকি হলগুলোতে দারোয়ানদের বুঝিয়ে বলার পর স্বেচ্ছায় গেইট খুলে শিক্ষার্থীদের প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়া হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘হলের তালা ভাঙবো, হল স্বাধীন করবো’, ‘এইমাত্র খবর এলো, হলগুলো স্বাধীন হলো’, ‘ভেঙে দে ভেঙে দে, হলের তালা ভেঙে দে’- ইত্যাদি সংবলিত স্লোগান দিতে দেখা যায়।

ঢাবির আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থী কালবেলাকে বলেন, আমরা হলগুলোর গেইট খোলার ব্যবস্থা করেছি আজ। জসীমউদদীন হল ও মুহসীন হলের তালা ভাঙতে হয়েছে। বাকিগুলোর গেইট ম্যানকে বুঝিয়ে বলার পর স্বেচ্ছায় খুলে দিয়েছে। আমরা তাদের বলে দিয়েছি, যদি কেউ কোনো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য হলে আসে তাকে যেন ঢুকতে দেওয়া হয়। তবে কেউ হলে থাকবে না।

প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন কোটা বাতিলে ২০১৮ সালের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ওইদিন থেকেই ৯ জুন পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ঈদ ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষ হলে গত ১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ফের ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। একপর্যায়ে ৭ জুলাই বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা করে। গত ১৪ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক বক্তব্যের জের ধরে রাতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এর জেরে ১৬ জুলাই ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ব্যাপক রণসাজে সজ্জিত হয়ে অবস্থান করেন। এদিন কিছু বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীর হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সহকারী প্রক্টর আহত হন। এদিন রাতেই শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে একাধিক প্রাধ্যক্ষ নিজ নিজ হলকে রাজনীতিমুক্ত ঘোষণা করতে বাধ্য হন।

পরের দিন (১৭ জুলাই) সকালে আরও কয়েকটি হলের শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কক্ষ ভাঙচুর ও হামলা করে হলগুলোকে ছাত্রলীগমুক্ত করেন এবং এসব হলের প্রাধ্যক্ষরাও নিজ নিজ হলকে রাজনীতিমুক্ত ঘোষণা করেন। এদিন বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আয়োজিত কফিন মিছিলে পুলিশের গুলি, সাউন্ড গ্র‍্যানেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং একাডেমিক পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here