রাজশাহীর থানাগুলোতে পুলিশ ফিরতে শুরু করেছে। শনিবার (১০ আগস্ট) সকাল থেকে রাজশাহীর জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন থানায় গিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি)। লোকজন নিয়ে তারা ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন। ফাঁড়িগুলোও পরিষ্কার করার কাজ শুরু হয়েছে।
শনিবার সকালে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) সদর দপ্তরে গিয়েছেন কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার। গত সোমবার আরএমপি সদর দপ্তরও জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে লুটপাট করা হয়। পুলিশ কমিশনারের কক্ষে একটি টেবিল ছাড়া কিছুই ছিল না। পুলিশ কমিশনার আরএমপি সদর দপ্তরে গিয়ে কিছু সময় অতিবাহিত করেন এবং সবকিছু ঘুরে দেখেন।
আরএমপির মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘আরএমপি সদর দপ্তরে এখনো বসার পরিবেশ নেই। আমরা পুলিশ লাইনসে বসে কাজ করছি। থানাগুলোতে ওসিরা চলে গেছেন। বসার মতো পরিবেশ করা মাত্রই অন্য পুলিশ সদস্যরা থানায় চলে যাবেন।’
রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই বেশির ভাগ থানায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিছু জায়গায় অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। দুএকদিনের মধ্যেই স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হবে।
এদিকে কাজে যোগ দিয়ে পুলিশ সদস্যদের নিজেদের জনগণের সেবক প্রমাণ করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতির রাজশাহী শাখা। শনিবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাহিনীর সদস্যদের প্রতি এ আহ্বান জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সদস্য ও গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, ‘জনগণের প্রতি আমরা আকুল আবেদন রাখছি, আমাদের অতি প্রয়োজনীয় এ বাহিনী পুনর্গঠনে যেন ভূমিকা রাখি। আমরা পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের প্রতিও আহ্বান জানাচ্ছি, অতি দ্রুত আপনারা কাজে যোগদান করুন এবং দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করে নিজেদের জনগণের সেবক হিসেবে প্রমাণ করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাসিনা সরকার রাষ্ট্রের প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করেছিলেন। জনগণের পুলিশ বাহিনীও এ থেকে রক্ষ পায়নি। পুলিশ বিভাগের কিছু উচ্চপর্যায়ের সুবিধাভোগী কর্মকর্তা সরকারের পক্ষ নিয়ে জনগণের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করেছে। হাতেগোনা কয়েকজন নির্লজ্জ কর্মকর্তার কারণে গোটা পুলিশ বিভাগের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এ জন্য বিভিন্ন থানা, ফাঁড়িতে আক্রমণ হয়েছে।’
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে চার শতাধিক পুলিশ নিহত হয়েছে দাবি করে মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, ‘ক্ষোভ থেকে থানা-ফাঁড়িতে জনগণ পুলিশের ওপর আক্রমণ করেছে। তাতে বিভিন্ন ইউনিটের চার শতাধিক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিভিন্ন জায়গা থেকে এখনো পুলিশের লাশ উদ্ধার হচ্ছে। পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে এ এক বেদনাদায়ক অধ্যায়।