ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ‘ফ্যাসিস্ট’ শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, এ দেশে আর কেউ স্বৈরতন্ত্র কায়েম করতে পারবে না।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর মিরপুর-১২ নম্বরের ডি-ব্লক ঈদগাহ মাঠে এক স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন। আন্দোলনে ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরের নেতা জুলফিকার আহমেদসহ মিরপুরে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এ সভার আয়োজন করে ‘আমাদের পাঠশালা’।
আমাদের পাঠশালার উপদেষ্টা জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধান দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। গত ১৫ বছর আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াই করেছি। তার আগে থেকে ফ্যাসিস্টব্যবস্থা সংবিধানিকভাবে কায়েম আছে। যে-ই সরকারে যায়, আমাদের জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়।’
এ সময় ছাত্র-জনতা হত্যাকারী ব্যক্তিদের বিচারের দাবি করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘দিনের পর দিন গুম, খুন, নির্যাতন করে ও হাজার হাজার বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মামলা দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার টিকে থাকতে চেয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনেও তারা রাষ্ট্রের সর্বশক্তি ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিল। যারা আমাদের সন্তানদের গুলি করেছে, হত্যা করেছে, তাদের কোনো ক্ষমা নেই। তারা বিনা বিচারে পার পেতে পারবে না। রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে এই হত্যাকারীদের বয়কট করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তরুণেরা জীবন উৎসর্গ করে সবার ওপর দায়িত্ব দিয়ে গেছেন যে এই দেশে আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হতে দেওয়া যাবে না। যেভাবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, সেভাবে বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো দরকার।’
স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্র আন্দোলনে নিহত সাব্বির চৌধুরী রনির বাবা মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘এখন আমার ছেলের মুখে বাবা ডাক শুনি না। আমার একটাই চাওয়া, আমার ছেলে যেন শহীদের মর্যাদা পায়।’
অসুস্থ থাকার সময় ছয় মাস ছেলে দেখভাল করেছে উল্লেখ করে নিহত মো. হাসানের মা মোছাম্মদ আসমা বলেন, ‘যদি আল্লাহ আমার বদলে আমার ছেলেকে বাঁচিয়ে রাখত, কোনো দুঃখ ছিল না।’
স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন আমার পাঠশালার প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন, পরিচালক আবুল হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা প্রমুখ।