শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই দেশ তরুণদের। তোমরা যেভাবে স্বাধীন করেছ, সেভাবে তোমাদের মনের মতো করে গড়তে পার। পাল্টে ফেলতে পার। পুরোনোদের বাদ দাও। তোমাদের মধ্যে যে শক্তি আছে, সৃজনশীলতা আছে, সেটাকে কাজে লাগাতে হবে। যারা দেশ স্বাধীন করেছে তাদের দিয়েই রাষ্ট্র কাঠামোর পরিবর্তন আনতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) ফ্রান্স থেকে দেশে ফিরে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তরুণ সমাজের উদ্দেশে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস।
তিনি বলেন, তরুণদের মাধ্যমে আমাদের যে স্বাধীনতা সেটাকে রক্ষা করতেই হবে। প্রতিটি মানুষের কাছে স্বাধীনতার সুফল পৌঁছে দিতে হবে। তা না হলে এ স্বাধীনতার কোনো দাম নেই।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার অর্থ হলো, তার নিজের পরিবর্তন, মানুষের পরিবর্তন। আজকের তরুণ সমাজ তোমরা জানো- এ দেশ তোমাদের হাতে। তোমরা স্বাধীন করতে পেরেছ, তোমরা এটাকে তোমাদের মনের মতো করে গড়েও তুলতে পার। তোমাদের দেখে বিশ্বের মানুষ শিখবে, কীভাবে একটা দেশ একটা তরুণ সমাজ পাল্টে দিতে পারে।
তিনি বলেন, তরুণদের আমরা উপদেশ দেই, পুরোনোদের বাদ দাও। তাদের এই পুরোনো চিন্তা আমাদের মুক্তি হবে না। তোমাদের মধ্যে যে শক্তি আছে, যে কিউরিসিট আছে বা যে সৃজনশীলতা রয়েছে, সেটাকে কাজে লাগাতে হবে। এটা শুধু বই খাতাতে লেখার জিনিস না, প্রকাশ করার জিনিস, সিস্টেম ভাঙার জিনিস। তিনি বলেন, তরুণরা যে স্বাধীনতা নিয়ে এসেছে তাদের দিয়ে আমাদের সমস্ত কাঠামোতে পরিবর্তন করতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুন বিজয় দিবস শুরু করল। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। যারা এটি করেছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, তারা (সমন্বয়করা) দেশকে রক্ষা করেছে। দেশকে পুনর্জন্ম করেছে। যে জন্য আন্দোলন হয়েছে সেটার ফলাফল যেন ব্যর্থ না হয়। পুনর্জন্মে যে বাংলাদেশ পেলাম সে বাংলাদেশ যেন পূর্ণতা পায়।
তিনি বলেন, যে বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ নতুন করে বিজয় পেল তা যেন পূর্ণতা পায়। এ স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে। প্রতিটি মানুষের কাছে এর সুফল পৌঁছে দিতে হবে। সেটা না করতে পারলে এই স্বাধীনতার কোনো মানে নেই।
এর আগে দুপুর ২টা ১১ মিনিটে ড. ইউনূসকে বহনকারী ফ্লাইটটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে ড. ইউনূসকে স্বাগত জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানসহ তিন বাহিনীর প্রধান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা, নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।