ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ বেশ পুরোনো। কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার এ ধরনের ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড সব সময় প্রশ্রয় দিয়ে আসছে। কিন্তু এবার প্রথা ভেঙে ৯ সেনাকে গ্রেপ্তার করেছে মিলিটারি পুলিশ।
জানা গেছে, ওই বন্দিকে হাসপাতালে নেওয়া হলে ধর্ষণের বিষয়টি জানাজানি হয়। তাকে এতই অত্যাচার করা হয়েছে যে তিনি হাঁটতে পারছেন না। চিকিৎসকরা তার পায়ুপথে মারাত্মক জখম দেখেছেন।
আলজাজিরা ও দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার (২৯ জুলাই) ইসরায়েলের নেজেভ মরুভূমির কুখ্যাত সদে তেইমান বন্দিশিবিরে অভিযান চালায় মিলিটারি পুলিশ। এ সময় সেনারা তাদের বাধা দেন। চলে তর্ক-বিতর্ক। এক পর্যায়ে বেরিকেড দিয়ে মরিচের স্প্রে ব্যবহার এবং হাতাহাতিতে জড়ান সেনারা। কিন্তু শেষমেশ সেখান থেকে অভিযুক্ত ৯ সেনাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ওই বন্দিশিবির ভাঙচুর করেছেন ইসরায়েলের কয়েকজন আইনপ্রণেতা ও উগ্র ডানপন্থিরা। তারা ব্যাপক বিক্ষোভেরও ডাক দিয়েছেন। উগ্রপন্থিরা ফিলিস্তিনিদের নির্যাতনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের অনেকে বলছেন, এ ধরনের গ্রেপ্তার সেনাদের মনোবল ভেঙে দিতে পারে। একজন ফিলিস্তিনের জন্য তারা সেনাদের ক্ষতি মেনে নিতে পারেন না।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনিরা এবং অধিকার গোষ্ঠীগুলো অনেক আগে থেকেই ইসরায়েলের কারাগারে বন্দিদের ধর্ষণের অভিযোগ করে আসছে। তারা বলছে, প্রায় ১০ মাস আগে গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলা শুরুর আগেই ইসরায়েলি কারাগারগুলোতে বন্দিদের যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে।
চলতি মাসেই একজন ফিলিস্তিনি আইনজীবী কারাগারে আটক বন্দিদের ধর্ষণ ও নির্যাতনের বীভৎস বিবরণ গণমাধ্যমে তুলে ধরেন। তিনি এক সাংবাদিকের বরাতে জানান, অন্তত দুজন বন্দির সঙ্গে তার দেখা হয়েছে। এর মধ্যে একজনকে কারাগারে ধর্ষণ করা হচ্ছে। অপরজনকে নগ্ন অবস্থায় তিনি দেখে এসেছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর গাজা উপত্যকায় এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩৯ হাজার জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়ে হাজারো মানুষ কাতরাচ্ছেন। তাদের অনেকের ভাগ্যে ন্যূনতম চিকিৎসাসেবাও জুটছে না। হামলা হচ্ছে হাসপাতাল ও আন্তর্জাতিক সংস্থার চিকিৎসা ক্যাম্পেও।
এ ছাড়া গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী অন্তত ৯ হাজার ৮০০ ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে অন্তত ৫৯০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ৫ হাজার ৪০০ জন আহত হয়েছেন।