রোম যখন পুড়ছিল, নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন। বহুল প্রচলিত এ প্রবাদটি শুনলেই মনের কোনো উঁকি দেয় চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন, লোভি ও চরিত্রহীন কোনো শাসকের কথা। ঠিক এ প্রবাদের মতোই গাজায় যখন ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় অকাতরে মরছে ফিলিস্তিনিরা, তখন অবরুদ্ধ উপত্যকা শাসনের স্বপ্নে বিভোর হয়ে আছেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
ইসারয়েল ও পশ্চিমা শক্তির পদলেহন করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা আব্বাস চাইছেন ফিলিস্তিনিদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে নিজের ক্ষমতাকে আরও দীর্ঘ করতে। তারই নগ্ন নজির সামনে তুলে ধরলেন আব্বাস প্রশাসনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোস্তফা।
রুশ গণমাধ্যম আরটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শেষে গাজা উপত্যকার শাসনভার পশ্চিম তীরে ক্ষমতাসীন সরকার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে ফিরে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোস্তফা। এমনকি এ ব্যাপারে এখন থেকেই পিএ জোটকে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
রোববার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি স্থাপনের একমাত্র পথ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা এবং পশ্চিম তীরে ক্ষমতাসীন পিএ জোটকে অবশ্যই গাজার জনগণকে সহযোগিতা করার জন্য দ্রুত তৎপরতা চালাতে হবে। সেই সঙ্গে গাজার ভবিষ্যৎ শাসন ক্ষমতা গ্রহণের জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে।
ফিলিস্তিনি এ নেতা জানান, ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা, গাজা-পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমের বাসিন্দা ফিলিস্তিনিদের প্রয়োজনীয় নাগরিক পরিষেবা প্রদান, ফিলিস্তিনি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা এবং গাজার জনগণের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পিএ জোট প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এক সময় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ক্ষমতায় ছিল পশ্চিম তীরের ক্ষমতাসীন পিএ জোট। ২০০৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে গাজার ক্ষমতায় আসে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরই রাজনৈতিক নির্লিপ্ততা ও ইসরায়েলি দালালির কারেণে পিএ জোটকে গাজা ভূখণ্ড থেকে বিতাড়িত করে গাজার জনগণ। ফলে ২০০৬ সালের পর থেকে ইসরায়েল ও পশ্চিাম শক্তির সমর্থনে পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমের ক্ষমতায় রয়েছে পিএ জোট।
জর্ডান নদীর পশ্চিম তীর, গাজা এবং পূর্ব জেরুজালেম— এই তিন ভূখণ্ডের সমন্বয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় ফিলিস্তিন; কিন্তু ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে এ তিন ভূখণ্ড ইসরায়েলের দখলে আছে। ওই যুদ্ধে জয়ী হয়েছিল ইসরায়েল।