রিকশাচালক বাবার বড় সন্তান ইমরান (২২)। নিজ এলাকার একটি কিন্ডারগার্টেনে করতেন শিক্ষকতা। ইচ্ছা ছিল লেখাপড়া শেষ করে সরকারি বা এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
সরকার পতনের কিছুদিন আগে ঢাকার সাভারের আশুলিয়া বাইপাইল এলাকায় ফুপুর বাসায় বেড়াতে যান ইমরান। ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় প্রাথমিক স্কুল জীবনের বন্ধুদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন ইমরান। আশুলিয়া থানা মসজিদের সামনে গেলে পাশের একটি বিল্ডিংয়ের ছাদে ছোড়া গুলি লাগে ইমরানের মাথায়।
পরে আন্দোলনকারীরা ইমরানকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হ্যাপি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা না পেয়ে ইমরানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরদিন ৫ আগস্ট সকালে মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। বর্তমানে ইমরান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৫০২ নম্বর রুমের ১০ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন।
তার মাথায় খুলি আলাদা করে চিকিৎসকরা সংরক্ষণ করে রেখেছেন। ৩ মাস পরে সেটি প্রতিস্থাপন করা হবে। ইমরানের জ্ঞান ফিরলে সে কথা বলতে পারে না। ইমরানের স্বাভাবিক জীবন নিয়ে শঙ্কায় তার পরিবার। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইমরানের স্বাভাবিক হতে এক বছর বা তার বেশি লাগতে পারে।
ইমরানের বাড়ি জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার চরসুখনগরী তালতলা মোড়ে। রিকশাচালক বাবার ৩ সন্তানের বড় সন্তান তিনি। পড়াশোনার পাশপাশি মাদারগঞ্জ শহরের একটি স্বনামধন্য প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক শাখার শিক্ষকতা করতেন তিনি।
রিকশাচালক বাবা বেলাল হোসেন বলেন, ছেলেটা আমার ছোট বোনের বাসাতে বেড়াতে যায়। ৪ তারিখ সন্ধ্যায় আন্দোলনে যোগ দিলে পুলিশ গুলি করে। এতে তার মাথায় গুলি লাগে। অনেক স্বপ্ন ছিল আমার বড় ছেলেকে নিয়ে। আমরা গরিব মানুষ, দিন এনে দিন খাই। সরকার যদি আমাদের সহযোগিতা করে তাহলে ভালো হয়।