সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি মাসুদ মৃধা নিয়োগের নয় বছরে একদিনের জন্যও তার দায়িত্ব পালন করেননি। স্কুলে হাজির না হয়েও দলীয় পদের প্রভাব খাটিয়ে এক থেকে দেড় মাস পর স্কুলে গিয়ে একসঙ্গে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে নিয়মিতভাবে বেতন-ভাতা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন মাসুদ মৃধা।
তার অনিয়মে বাধা দিলে প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সদস্যদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে দপ্তরি কাম পিয়ন মাসুদ মৃধার বিরুদ্ধে। তার দাপটে অতিষ্ঠ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
ঘটনাটি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের কমলাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
শিক্ষক, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম পিয়ন পদে ২০১৬ সালে যোগদান করেন উপজেলার কমলাপুর গ্রামের আহম্মদ আলী মৃধার ছেলে ও খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য মাসুদ মৃধা (৩৫)। উপজেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার সুপারিশে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিয়োগ পাওয়া মাসুদ মৃধা নিজেকে যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ওই নেতার কাজে ব্যস্ত থাকার অজুহাত দিয়ে কখনোই ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করতেন না।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সালমা বেগম দপ্তরি মাসুদের স্বেচ্ছাচারিতার কথা স্বীকার করে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার দাপট দেখিয়ে দপ্তরি মাসুদ স্কুলের দায়িত্ব পালন না করে ওই নেতার সঙ্গে ঘুরে বেড়ান। এ নিয়ে শিক্ষক ও স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্যরা প্রতিবাদ করলে তাদেরকে গালিগালাজসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়। মাসুদ পিয়ন হয়েও সে আমাদের শাসন করে।
তিনি বলেন, গত ১৫ মে মাসুদ স্কুলে এসে ৫ জুলাই পর্যন্ত একসঙ্গে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান। এরপর আর স্কুলে আসেননি।
প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী বলেন, নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে দপ্তরি মাসুদ মৃধা কোনোদিনই ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেননি। তার ইচ্ছামাফিক দেড় থেকে দুই মাস পর স্কুলে এসে স্বাক্ষর দিয়ে চলে যান। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত মাসুদ বলেন, বিদ্যালয়ে সঠিক ভাবে দায়িত্বপালন করে আসলেও স্থানীয় একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাসলিমা বেগম বলেন, চাকরির ক্ষেত্রে বড় পরিচয় মাসুদ মৃধা বিদ্যালয়ের একজন কর্মচারী। বিষয়টি খতিয়ে দেখে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।