রাজশাহীতে গুলিবিদ্ধ শিবির নেতা আলী রায়হান নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) রাতে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানায় এ মামলা করেন নিহতের ভাই রানা ইসলাম।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এ ছাড়াও মামলায় ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারি এলাকা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে সাহেব বাজারের দিকে আসতে থাকে। পথিমধ্যে মিছিলটি মহানগরীর আলুপট্টি এলাকার স্বচ্ছ টাওয়ারের কাছে পৌঁছলে মেয়র লিটন সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিহত করতে সন্ত্রাসীদের নির্দেশ দেন। এ সময় তিনিসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালায়। এতে আহত হন আলী রায়হান। পরে ৮ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, মাহনগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌদিদ আল মাসুদ রনি, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাজিব, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ডা. সিরাজুম মুবিন সবুজ, রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিক দত্ত, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম জাফর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল গালিব, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনার, ২৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরমান আলী, ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মমিন, ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম বাবু, ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিজামূল আজীম, ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহদাৎ হোসেন শাহু, রাজশাহী মহানর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুজ্জামান শফিকসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও এক হাজার থেকে ১২শ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি মাসুদ পারভেজ বলেন, রাহয়ান আলীর মৃত্যুর ঘটনায় তার ভাই বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। সেটি আমার গ্রহণ করেছি। এতে ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে এক হাজার থেকে ১২শ জনকে আসামি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট দুপুরে রাজশাহী নগরীর আলুপট্টি এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী রায়হান (২৮)। তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর গত ৮ আগস্ট সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
ওইদিন সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। আহত অনেকেই এখনো রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।