শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরপর বন্ধ হয়ে যায় দেশের সকল থানার কার্যক্রম। আতঙ্কে গা-ঢাকা দেন পুলিশ সদস্যরা। প্রায় চারদিন পর শুক্রবার সেনা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় থানা পুলিশ কার্যক্রম সীমিত পরিসরে শুরুর চেষ্টা চলছে। পুরো জনবল কর্মস্থলে যোগ না দেওয়ায় সীমিত জনবল নিয়েই প্রাথমিকভাবে ডিএমপির কয়েকটি থানার কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে ভীতি কাজ করছে কর্মস্থলে যোগদান করা পুলিশ সদস্যদের মাঝে।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ডিএমপি তেজগাঁও থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। থানার নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যরা কাজ করছে, সঙ্গে রয়েছে আনসার সদস্যরা।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক বলেন, সামরিক বাহিনীর সদস্যরা আমাদের পুলিশ সদস্যদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন। মানুষের জানমাল রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আজকে আমরা সাময়িক বাহিনীর সহায়তায় পুলিশের সকল কার্যক্রম শুরু করেছি। সকল নাগরিকদের কাছে অনুরোধ আপনারা থানায় আসুন। আপনাদের সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত।
তিনি বলেন, তেজগাঁও বিভাগে ৬টি থানার মধ্যে ৩টি থানার কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত থানার স্বল্প পরিসরে কাজ চলছে। এরই মধ্যে থানাগুলোতে অনেক পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দিয়েছে। বাকীরাও আসতে শুরু করেছে। আমরা আশা করছি দুপুরের মধ্যে আমাদের সকল পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে যোগ দিবেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তেজগাঁও থানার কার্যক্রম শুরু হলেও চার ভাগের এক ভাগ সদস্য থানায় উপস্থিত হয়েছেন। বাকিরা আসেননি। যারা এসেছেন তারাও ভীত। আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। পুলিশ সদস্যরা কর্মস্থলে যাতায়াতে স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন না। পরিচয় আড়াল করে তারা চলাফেরা করছেন। জনসেবার জন্য থানা খুলে দেয়া হলেও পুলিশ সদস্যরা থানার ভেতরেই অবস্থান করছেন। এক ঘণ্টার বেশি সময়ে সেবা প্রত্যাশীদেরও থানায় আসতে দেখা যায়নি।
থানার কার্যক্রম শুরুর আগে তেজগাঁও থানা পুলিশের সহায়তায় স্থানীয়দের সঙ্গে বৈঠক করেছে সেনাবাহিনী। সাধারণ মানুষ থানার কার্যক্রম শুরুর ব্যাপারে অনুরোধ করেছে এবং এ ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর ২৫ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট কোম্পানি অধিনায়ক মো. শাখাওয়াত খন্দকার।
তিনি কালবেলাকে বলেন, আমরা স্থানীয়দের চিনি না। পুলিশের সহায়তায় সমাজের গ্রহণযোগ্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তেজগাঁও থানা এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি।
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, কিছুদিন আগেও আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করেছি। আজ আমাদের অনেক পুলিশ সদস্য আমাদের কাছে নেই। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমাদের কিছু উর্ধ্বতন কর্মকর্তার জন্য মানুষে সঙ্গে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আসলে আমরা জনগণের সেবক। জনগণই আমাদের মূল। আপনারা থানায় আসুন। আপনাদের সেবার আমরা প্রস্তুত রয়েছি।