কেনিয়ার এক ধর্মীয় গোষ্ঠীর নেতা পল এনথেঞ্জ ম্যাকেঞ্জি এবং তাঁর ২৯ সহযোগীকে ১৯১ শিশু হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। শিশুগুলোর মৃতদেহ একটি বনে সমাহিত করা শত শত মানুষের মধ্যে পাওয়া গিয়েছিল। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এই অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন আসামিরা। তবে ভারত মহাসাগরের কাছের কেনিয়ার উপকূলীয় শহর মালিন্দির একটি আদালতে আনা এই অভিযোগ আসামিরা সবাই অস্বীকার করেন।
একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে বিচারের জন্য মানসিকভাবে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে এবং এক মাসের মধ্যে মালিন্দি হাইকোর্টে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইনজীবীরা বলেছেন, ম্যাকেঞ্জির নির্দেশে অনুসারীরা তাদের নিজেদের সন্তানসহ অনাহারে মৃত্যুবরণ করে। বিশ্ব ধ্বংস হওয়ার আগে স্বর্গে যেতে পারবেন, ধর্মীয় নেতা পল এনথেঞ্জ ম্যাকেঞ্জির এমন কথায় তারা খাবার খাওয়া থেকে বিরত ছিলেন। ফলে স্বর্গ লাভের আশায় তাদের মৃত্যু হয়।
এটি সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ ধর্ম সম্পর্কিত অন্ধবিশ্বাসগুলোর একটি।
ধর্মীয় নেতা ম্যাকেঞ্জি ছিলেন ট্যাক্সিচালক এবং পরে তিনি স্বঘোষিত গির্জা যাজক হন। তিনি ইতিমধ্যেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি শিশু নির্যাতন এবং নিষ্ঠুরতার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। অনাহারে থেকে মারা গেছেন এমন চারজনের মরদেহ উদ্ধারের পর গত বছরের ১৫ এপ্রিল তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।
কেনিয়ার উপকূলীয় ছোট্ট শহর মালিন্দির অদূরে শাকাহোলা নামের অগভীর বনে মৃতদেহগুলো পাওয়া গিয়েছিল। কবর খুঁড়ে তুলে আনা এসব মরদেহের মধ্যে নারী ও শিশুদের লাশ পাওয়া যায়। ময়নাতদন্ত থেকে জানা যায়, এর মধ্যে ৪২৯ জনের বেশি ক্ষুধার কারণে মারা গেছেন। কিন্তু শিশুসহ অন্যদের শ্বাসরোধ, মারধর করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেনিয়ার সংবাদমাধ্যমে কবর খুঁড়ে তুলে মরদেহ আনার এই ঘটনাকে ‘শাকাহোলা বন গণহত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম কেবিসি ম্যাকেঞ্জিকে ‘কাল্ট লিডার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
সূত্র : আলজাজিরা